শনিবার, ৯ জুলাই, ২০২২

গলব্লাডার স্টোন বা পিত্তথলির পাথর হওয়ার কারণ ও তা দূর করার উপায়

পিত্তথলিতে পাথর কেন হয় অর্থাৎ পিত্তথলির পাথর হওয়ার কারণ মূলতঃ কি? অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা, গর্ভাবস্থা, গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খাওয়া, লিভারের রোগ, ডায়াবেটিস ইত্যাদিকে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার কারণ বলে দায়ী করা হলেও মূল বিষয়টি কিন্তু তা নয়। আমাদের পেটের ডানদিকে লিভারের পেছনে ও তলার দিকে থাকে আমাদের পিত্তথলি বা গলব্লাডার। পিত্তরস তৈরি করাই এর কাজ। খাবার হজমে, বিশেষ করে চর্বিজাতীয় খাবার হজম করতে পিত্তরস দরকার হয়। নানা কারণে এই পিত্তথলিতে বিভিন্ন পদার্থ অতিরিক্ত জমে গিয়ে পাথরের সৃষ্টি করে।

পিত্তথলির পাথর আসলে ছোট ছোট বালুর দানার মতো থেকে শুরু করে মটরের দানা বা তার চেয়েও বড় শক্ত দানাদার বস্তু, যা বিভিন্ন রঙের ও বিভিন্ন আকৃতির হতে পারে। এটা নির্ভর করে কী পদার্থ দিয়ে পাথরটা তৈরি তার ওপর। কোলেস্টেরল, বিলিরুবিন বা ক্যালসিয়াম ইত্যাদি পদার্থের সংমিশ্রণে তৈরি এই পাথরগুলো পিত্তরসের সঙ্গে মেশানো অবস্থায় থাকে এবং হালকা বাদামি, ময়লাটে সাদা বা কুচকুচে কালো রঙেরও হতে পারে।
গলব্লাডার স্টোন বা পিত্তথলির পাথর হওয়ার কারণ

পিত্তথলির পাথর কাদের বেশি হয়?

অতিরিক্ত ওজনের ব্যক্তিদের পিত্তথলিতে পাথর বেশি হতে দেখা যায়। পুরুষদের তুলনায় নারীদের এই প্রবণতা বেশি। এ ছাড়া চল্লিশোর্ধ্ব বয়স, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাবার অভ্যাস, অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ ইত্যাদি এই ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

যে বিষয়গুলি পিত্তথলিতে পাথর হতে সহায়তা করে?

  • পিত্ত একটি তরল পদার্থ যার মধ্যে কিছু কঠিন পদার্থ থাকে। তরল পদার্থের পরিমাণ কমে গেলে কঠিন পদার্থের পরিমাণ বেড়ে গেলে পাথর হতে পারে। 
  • কোন কারণে যদি পিত্তথলির সঙ্কোচন ও প্রসারণের ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় তাহলে পিত্তথলিতে পাথর হতে পারে। 
  • খাবারে কোলেস্টরলের পরিমাণ বেশি থাকলে পিত্তথলিতে পাথর হয়।
  • অর্থাৎ যারা চর্বি জাতীয় খাবার বেশি খায়, যারা ভেজাল খাবার খান।
  • বছরের পর বছর এলোপ্যাথিক গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেলেও পিত্তথলিতে পাথর হয়।
  • যেসব নারী নিয়মিত পিল খান তাদেরও পিত্তথলিতে পাথর হয়।
  • যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের পিত্তথলির পাথর হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
  • যাদের লিভারের রোগে যারা আক্রান্ত তাদের  পিত্তথলিতে পাথর হতে পারে।
  • যেসব নারী বারবার গর্ভবর্তী হন তাদের  পিত্তথলিতে পাথর হতে পারে।
  • যারা শারীরিক পরিশ্রম কম করে তারাও পিত্তথলির পাথর হওয়ার ঝুঁকিতে ভোগেন।
  • যারা মোটা ও ওজন বেশি তাদের পিত্তথলিতে পাথর হতে পারে।

পিত্তথলির পাথরের সবচেয়ে উন্নত চিকিৎসা কি?

মানুষের মনে একটা ভ্রান্ত ধারণা হলো - অপারেশন বা সার্জারি হলো পিত্তথলির পাথর দূর করার একমাত্র চিকিৎসা। এটা মূলত একটা ভ্রান্ত ধারণা আগেই বলেছি। কারণ, বিসদৃশ প্যাথিতে এই সমস্যার কোন ভালো ম্যানেজমেন্ট নেই। ফলে তারা সার্জারী করে পিত্তথলি কেটে ফেলে দিতে বলে থাকে। অথচ প্রপার হোমিও চিকিৎসায় শুধুমাত্র পার্শপ্রতিক্রিয়াহীন শক্তিকৃত ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে  পিত্তথলির পাথর এবং এ সংক্রান্ত যাবতীয় জটিলতা সহজেই দূর হয়ে যায়। 

অপারেশন বা সার্জারির আদৌ কোন প্রয়োজন পড়ে না। তবে এর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন রেজিস্টার্ড এবং দক্ষ হোমিও চিকিৎসক যিনি এই সমস্যার প্রপার ট্রিটমেন্ট দিতে জানেন। দক্ষ চিকিৎসক নির্বাচনে ব্যর্থ হলে আপনি এই সমস্যা থেকে আরোগ্য লাভ করতে প্রায় শত ভাগ বিফল হবেন। পিত্তথলির পাথর হওয়ার কারণ যাই হোক না কেন তা দূর করার কার্যকর উপায় হলো হোমিওপ্যাথি। 
গলব্লাডার স্টোন বা পিত্তথলির পাথর হওয়ার কারণ ও তা দূর করার উপায় Dr. Delowar Jahan Imran 5 of 5
পিত্তথলিতে পাথর কেন হয় অর্থাৎ পিত্তথলির পাথর হওয়ার কারণ মূলতঃ কি? অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা, গর্ভাবস্থা, গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খাওয়া, লিভারের রো...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন